🛶 সোনালী রোদ, ধূসর চর
গঙ্গা নদীর তীরে সেদিনের সকালটা ছিল অন্যরকম। হেমন্তের শেষে জল নেমে যাওয়ায় বিশাল চর জেগে উঠেছে। শুকনো বালির ঢেউ আর পাথুরে মাটি যেন এক রুক্ষ ক্যানভাস। জলের ক্ষীণ ধারাটি এখন অনেকটা দূরে, সরু ফিতের মতো বয়ে চলেছে।
চর পেরিয়ে, নদীর কিনার ঘেঁষে এক টুকরো সবুজ ঘাসের ওপর সারি সারি নৌকা বাঁধা। তাদের মাথায় হলুদ রঙের ছাউনিগুলো যেন দূরের সূর্যের সোনালী আভা ধরে রেখেছে। এই নৌকাগুলোই চরের মানুষগুলোর জীবন, তাদের মাছ ধরার জাল আর নিত্যদিনের পারাপারের মাধ্যম।
একটু দূরে, সেই সবুজ ঘাসের আড়ালে, একটি নীল আর লাল তাঁবু পাতা। এটি রফিক আর তার ছোট বোন আয়শার অস্থায়ী ঠিকানা। গত বছর হঠাৎ বন্যার সব কেড়ে নেওয়ার পর, এটাই তাদের নতুন আশ্রয়।
রফিক দেখল, চরের ওপর দিয়ে একটি লোক হেঁটে আসছে, তার মাথা সূর্যের তীব্র আলোয় ঢাকা। রফিকের মনে হলো, এ যেন জীবনেরই ছবি—কিছু মানুষ এগিয়ে চলেছে জীবন সংগ্রামের পথে, আর কিছু মানুষ এখনও তীরের অপেক্ষায়।
ঠিক সেই সময়, নদীর মাঝখান দিয়ে একটি বড় নৌকা ধীরে ধীরে এগিয়ে চলল, তার ভেতরে মানুষের গুঞ্জন। রফিক জানে, জীবনের যাত্রা থামে না।
সে তাঁবুর ভেতর থেকে কাঠের বাটিতে রাখা ভাত আর সামান্য ডাল বের করলো। আয়শা তখনো ঘুমোচ্ছে। রফিক তাঁবুর বাইরে এসে বসলো, তার চোখ দূরে বাঁধা নৌকাগুলোর দিকে। তারা যেন এক নীরব প্রতিজ্ঞা—জল আবার আসবে, জীবন আবার ভরে উঠবে।
রফিক দীর্ঘশ্বাস ফেললো না। তার চোখ স্থির হলো আকাশের দিকে। এখনকার এই রুক্ষতা সাময়িক, সে জানে। আর এই নৌকাগুলোই একদিন তাকে আর আয়শাকে আবার নিয়ে যাবে সেই জীবনের দিকে, যেখানে সবুজ আর জল দুটোই অফুরন্ত।
আর এভাবেই, সোনালী রোদের নিচে, ধূসর চরের কিনারায় বসে রফিক নতুন দিনের স্বপ্ন দেখলো। #🏞প্রাকৃতিক ফোটোগ্রাফি📷#😇আজকের Whatsappস্টেটাস 🙌#📢শেয়ারচ্যাট স্পেশাল#😍আমার পছন্দের স্টেটাস😍#🤩 আমার পছন্দের স্ট্যাটাস 🤩
#🤩 আমার পছন্দের স্ট্যাটাস 🤩#😍আমার পছন্দের স্টেটাস😍#📢শেয়ারচ্যাট স্পেশাল#😇আজকের Whatsappস্টেটাস 🙌#🏞প্রাকৃতিক ফোটোগ্রাফি📷 অচেনা সবুজ বন্ধু
গলিটার শেষ মাথায়, একটা পুরোনো সবুজ দরজার ঠিক সামনে, চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে ছোট্ট একটা গাছ। তার নাম কেউ জানে না। কেউ তাকে যত্ন করে জল দেয় কিনা, তাও জানা নেই। তবুও তার পাতাগুলো সবুজের মাঝে সাদা ছোপ নিয়ে কেমন যেন হাসে।
দিনের বেলায় দরজাটা যখন খোলা থাকে, তখন মানুষজন হুড়মুড় করে এদিক-ওদিক ছোটে। কেউ তার দিকে ফিরেও তাকায় না। কিন্তু গাছটা চুপচাপ দাঁড়িয়ে থাকে, যেন সে এক নীরব প্রহরী। তার দৃষ্টিতে সব দেখা, সব শোনা।
আজ সন্ধে নেমেছে। পথবাতিটা দূরে, তাই তার আলো এখানে পৌঁছোয় না। কেবল পাশের বাড়ির জানলা থেকে আসা ক্ষীণ আলোয় গাছটার সবুজ-সাদা পাতাগুলো রহস্যময় দেখাচ্ছে। এই নিস্তব্ধ সময়ে গাছটার যেন নিজস্ব একটা জগৎ। সে তার নিজের ছায়ার সাথে কথা বলে, আর রাতের বাতাস তার পাতা ছুঁয়ে ফিসফিস করে চলে যায়।
হঠাৎ, দরজাটার আড়াল থেকে ছোট্ট একটা বেড়ালছানা বেরিয়ে এলো। ভয়ে ভয়ে চারপাশটা দেখল। তারপর এসে বসল গাছটার গোড়ায়। গাছটা যেন নিজের ডালপালা একটু নামিয়ে দিল, তাকে একটু আশ্রয় দিতে। হয়তো এইটুকুই গাছটার খুশি। নীরবে একটা বন্ধুকে সঙ্গ দেওয়া।
রাত গভীর হলো। বেড়ালছানাটা ঘুমিয়ে গেল গাছটার ছায়ায়। আর গাছটা? সে সারারাত দাঁড়িয়ে রইল, ভোরের আলোর জন্য অপেক্ষা করতে। কারণ সে জানে, আলো এলেই আবার জীবন শুরু হবে, আর সে তার ছোট্ট বন্ধুকে বিদায় জানিয়ে দিনের কোলাহল দেখবে।
এইভাবে, একটা পুরোনো দরজার সামনে, একটি ছোট্ট টবে, গাছটা প্রতিদিন জীবনের ছোট ছোট মুহূর্তের সাক্ষী হয়ে থাকে—সে এক অচেনা সবুজ বন্ধু।