🕯️ ভূত চতুর্দশীর রাত –
পর্ব ১ : আলো আর অন্ধকারের শুরু
বিজনপুর গ্রামের আজ এক অদ্ভুত সন্ধ্যা। আকাশে না আছে মেঘ, না আছে বৃষ্টি, তবু বাতাসে যেন অজানা এক গন্ধ। চারদিকে তালপাতার শব্দে কেমন রহস্যময়তা। আজ ভূত চতুর্দশী—যে রাতে মানুষ বিশ্বাস করে, প্রিয়জনেরা ফিরে আসে আশীর্বাদ দিতে।
গ্রামের প্রত্যেক ঘরে ঘরে চলছে প্রদীপ জ্বালানোর আয়োজন। মিঠি, গ্রামের এক প্রাণোচ্ছল মেয়ে, সারাদিন মায়ের সঙ্গে ঘর পরিষ্কার করেছে, এখন প্রদীপ সাজাচ্ছে। হাতে ছোট কাঁসার থালা, তাতে তুলোর সলতে, ঘি, আর কয়েকটা প্রদীপ।
মা লাবণ্য বললেন,
— “মিঠি, মনে রাখবি, চৌদ্দটা জায়গায় প্রদীপ দিতে হয়—দরজায়, উঠোনে, গোয়ালঘরে, পুকুরপাড়ে, ছাদের কোণে… যেন অন্ধকারের কোনো জায়গা না থাকে।”
মিঠি হেসে উত্তর দিল,
— “মা, এতগুলো প্রদীপে যদি ভূত আসে, সে তো পথ খুঁজেই পাবে না!”
লাবণ্য মৃদু হেসে বললেন,
— “সব ভূত ভয় দেখাতে আসে না, মেয়ে। কেউ কেউ আশীর্বাদ দিতে আসে।”
বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা। আকাশে লালচে আলো, পাখির ডাক মিলিয়ে যাচ্ছে। মিঠি একে একে প্রদীপ জ্বালাচ্ছে। আলোয় তার মুখটা কেমন উজ্জ্বল লাগছে। কিন্তু শেষ প্রদীপটা দিতে গিয়েই সে থেমে গেল।
পুরোনো আমগাছটার নিচে যেন কেউ দাঁড়িয়ে আছে। সাদা ধবধবে শাড়ি পরা এক বৃদ্ধা, হাতে ছোট পিঁড়ি আর প্রদীপ। বাতাস থেমে গেল এক মুহূর্তে।
মিঠি কাঁপা গলায় বলল,
— “কে আপনি?”
বৃদ্ধা হেসে বললেন,
— “ভয় পাস না মা, আমি তোরই ঘরের মানুষ। তোর ঠাকুমার ঠাকুমা আমি। আজ আলো দেখতে এলাম।”
মিঠি অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। বৃদ্ধার চোখে ভয় নয়, বরং মায়া।
বৃদ্ধা ধীরে ধীরে বললেন,
— “এই প্রদীপটা রাখিস, যেন তোর ঘরের ভালোবাসা কখনো নিভে না যায়।”
বলে তিনি প্রদীপটা মিঠির হাতে দিলেন।
পরক্ষণে হাওয়ার এক মৃদু ঝাপটা এল, আর বৃদ্ধা মিলিয়ে গেলেন আমগাছের ছায়ায়।
মিঠি তাকিয়ে দেখল—বাতাস বয়ে গেলেও প্রদীপটা একটুও নেভেনি। আলোটা যেন আরও উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে।
সে নিঃশব্দে বলল,
— “সব ভূতই ভয় দেখাতে আসে না… কেউ কেউ আলো হয়ে ফিরে আসে।”
দূরে গ্রামের ঢাক বাজছে, মানুষ ঘরে ফিরছে, আর মিঠির চোখে সেই প্রদীপের আলোয় ভাসছে অদ্ভুত শান্তি। ✅✅ Follow for next part and visit page ✅✅ #☠ভুত চতুর্দশী👻
